চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা খানম বলেছেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিবন্ধিত গ্রাম সিএনজি অটোরিক্সার চেয়ে অনিবন্ধিত অটোরিক্সার সংখ্যা কয়েকগুন বেশী। সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে গাড়ীগুলো দীর্ঘ বছর ধরে যাত্রী পরিবহণ করছে। অনিবন্ধিত গ্রাম সিএনজি অটোরিক্সাগুলো দ্রæত সময়ে নিবন্ধনের আওতায় না আসলে বিআরটিএ ও জেলা পুলিশ শীঘ্রই অভিযান শুরু করবে। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে অনিবন্ধিত গ্রাম সিএনজি অটোরিক্সাগুলো আটক করে ডাম্পিংয়ে দেয়া হবে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা ও উত্তর চট্টগ্রামের কোন্ উপজেলার কোথায় ডাম্পিং স্টেশন করা যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ জায়গা খুঁজে জেলা প্রশাসনের কাছে তালিকা দিলে যাচাই-বাছাই করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে গত মাসের খাতওয়ারী অপরাধ চিত্র তুলে ধরেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) একেএম গোলাম মোর্শেদ খান।
জেলা প্রশাসক বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, বালি উত্তোলন, পাহাড় কাটা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, খুন, ডাকাতি,চাঁদাবাজি, রাহাজানি, নারী ও শিশু নির্যাতন রোধ, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, রেলপথ, নৌ-পথ ও সড়ক পথে মাদক পাচার রোধ এবং বন্য হাতি থেকে জানমাল রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। গত ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন স্থান থেকে লুঠ হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান আরও জোরদার করতে হবে।
সভায় জেলার নবাগত পুলিশ সুপার (এসপি) রায়হান উদ্দিন খান বলেন, জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ বাহিনী কাজ করছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি শেষে থানাগুলোকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে অর্ন্তবর্তী সরকারের নির্দেশনা মতে থানাগুলোর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) পরিবর্তন করা হয়েছে। চলতি সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানাগুলো আবার নতুনভাবে সাজবে। থানায় গিয়ে দলমত নির্বিশেষে সবাই সমান সেবা পাবে।
এসপি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর রাউজান, লোহাগাড়া, হাটহাজারী থেকে বেশ কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুঠ হয়েছে, কিছু কিছু উদ্ধার হয়েছে, যে সকল অস্ত্র ও গোলাবারুদ এখনো উদ্ধার হয়নি সেগুলো উদ্ধারে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সঠিক ঘটনায় থানায় মামলা নিতে পুলিশ গড়িমসি করবেনা। সাংবাদিকদেও নামেও মামলা হচ্ছে। তবে যারা ঘটনার সাথে জড়িত নয়, তাদেরকে মামলায় যুক্ত না করার জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
সভায় জেলার নবাগত সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার ১৫ উপজেলার মধ্যেলোহাগাড়া, সাতকানিয়া ও বাঁশখালীতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত আগস্ট মাসে চট্টগ্রামে ২০২ জন ও চলতি মাসের এ পর্যন্ত ৩৪৫ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) রায়হান উদ্দিন খান, এনএসআই’র যুগ্ম পরিচালক শাহ সুফি নুর আলম সরকার, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভশনের ক্যাপ্টেন ফায়িজ, বিজিবি’র সহকারী পরিচালক মফিজুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা.জাহাঙ্গীর আলম, র্যাবের এএসপি মোঃ নাসির উদ্দিন, কোস্টগার্ড প্রতিনিধি লেঃ কর্ণেল মোসাব্বির, নৌবাহিনী প্রতিনিধি লেঃ সিফাত রাব্বি আশরাফ চৌধুরী, আনসার ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট ফরিদা পারভীন সুলতানা, সিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপস্) বাবুল চন্দ্র বণিক, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ তাজবিল্লাহ, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থী, ভোক্তা অধিকার জেলার সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা জেরিন (মিরসরাই), মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী (ফটিকছড়ি), এবিএম মশিউজ্জামান (হাটহাজারী), রিগ্যান চাকমা (সন্ধীপ), কে.এম রফিকুল ইসলাম (সীতাকুন্ড), ইনামুল হাছান (লোহাগাড়া), মাহমুদুল হাসান (রাঙ্গুনিয়া), হিমাদ্রী খীসা (বোয়ালখালী), আলাউদ্দিন ভূইয়া জনী (পটিয়া), মাহমুদা বেগম (চন্দনাইশ), মিল্টন বিশ্বাস (সাতকানিয়া), জেসমিন আক্তার (বাঁশখালী), মাসুমা জান্নাত (কর্ণফুলি), সীতাকুন্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবিএম নায়হানুল বারী প্রমূখ।