চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আট বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৬ জনে।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে পাঁচজন বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ৪১ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ১০ জন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল ইনফেকশাস ডিজিজেজ হাসপাতালে, দুইজন চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে এবং আটজন চট্টগ্রাম সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া আক্রান্ত আরও ৫০ জন চট্টগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামের অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবু মো. সাফাত চৌধুরী (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার বাসা নগরীর চকবাজারের দেওয়ানবাজার এলাকায়। ওই শিশু ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
সবচেয়ে বেশি মারা গেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৪ জন মারা গেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ বেসরকারি হাসপাতালে।
এবছর এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ১৩৫ জন। গত আগস্ট মাসেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মিলেছে ৩ হাজার ১১ জন।যা ২০২২ সালের আগস্ট মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মিলেছিল ১১৪ জন আর ২০২১ সালের ৩৯ জন।
আর গত জুলাই মাসেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মিলেছে ২ হাজার ৩১১ জন।যা ২০২২ সালের জুলাই মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মিলেছিল ৬৪ জন আর ২০২১ সালের মাত্র ৭ জন।এবছর এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ১৩৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৮০৫ জন, নারী আক্রান্ত ১ হাজার ৭৪৮ জন এবং শিশু আক্রান্ত ১ হাজার ৫৮২ জন।
কিন্তু গত বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৫ হাজার ৪৪৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে ৪১ জনের মৃত্যু হয়। করোনা মহামারি শুরুর আগে ২০১৯ সালে বিশ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন।
তবে ডেঙ্গুতে এ বছর কত মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন বা প্রতি বছর কত মানুষ আক্রান্ত হন, তার সঠিক পরিসংখ্যান সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের কাছ থেকে পাওয়া যায় না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যাই শুধু প্রকাশ করে। বাস্তবে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন।