কক্সবাজারে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীসহ আন্দোলনকারীদের উপর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ দ্বারা হামলার মূল অর্থ যোগানদাতা-পরিকল্পনাকারী ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম এখনও দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বীরদর্পে।
জানা যায়, ১৬ জুলাই শিক্ষার্থীরা যখনই শহরের বিলকিস মার্কেট এলাকায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মিছিল নিয়ে যাচ্ছিল সেসময় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও বর্তমান নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে আন্দোলন বানচালের পরিকল্পনায় ব্যস্ত ছিলেন সদর-রামু আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম। মূলত কেন্দ্রীয় নেতাদের নজরে আসতে ছাত্রলীগ-যুবলীগকে অর্থ যোগান দিয়েছিলেন এমন অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া, জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক বোর্ড মেম্বার, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন কক্সবাজার উপ-কেন্দ্রের পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন আওয়ামীলীগের প্রভাব কাটিয়ে। জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা মোস্তাক আহমেদ চৌধুরীর ও মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাবেক সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের দোসর লে. কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমেদের আস্থাবাজন হিসেবে পরিচিত অর্জন করেন।
মাঠপর্যায়ে তেমন কাজ না করলেও মনোনয়ন ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক পদ প্রত্যাশী বদিউল আলম কেন্দ্রীয় নেতাদের নজরে আসতে কক্সবাজারে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীসহ আন্দোলনকারীদের উপর হামলার মূল অর্থযোগানদাতা-পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। কৌশলে তিনি বিভিন্ন মামলা থেকে নিজের নাম সরিয়েছেন। যার জন্য খরচ করেছেন লাখ লাখ টাকা। সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার পরও বদিউল আলম প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে এখনো বীরদর্পে স্বৈরাচার সরকারের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামীলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা মোস্তাক আহমেদ চৌধুরীর ও মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাবেক সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের দোসর লে. কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমেদকে নিয়মিত অর্থ যোগান দেয়ার তথ্য মিলেছে। মূলত বদিউলের সাথে এই তিনজন নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তাদের কাছে কক্সবাজারের পরিস্থিতির সার্বক্ষণিক আপডেট দিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে এই তিনজনের বিভিন্ন দি-নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছেন।
গেল ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এসব অপকর্মে জড়িতরা গা ঢাকা দিলেও নানা কৌশল অবলম্বন করে আবারও সক্রিয়ভাবে নিজেকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন বদিউল। আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতা ও সুবিধাভোগী এবং মোস্তাক আহমেদ চৌধুরীর আশীর্বাদপুষ্ট আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবে পরিচিতি রয়েছে লোকমুখে।
এদিকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রের নৌকার এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামীলীগের এক নেতা জানান, ‘ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী ও মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাবেক সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের দোসর লে. কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমেদের আশীর্বাদপুষ্ট ছিলেন। জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক বোর্ড মেম্বার, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন কক্সবাজার উপ-কেন্দ্রের পদ ভাগিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ‘কক্সবাজারে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীসহ আন্দোলনকারীদের উপর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ দ্বারা হামলার মূল অর্থযোগানদাতা-পরিকল্পনাকারী হিসেবে নিজেকে জাহির করতেন। শুধুমাত্র শীর্ষ নেতাদের নজরে আসতে। কারণ তিনি সদর-রামু আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।
এদিকে, কক্সবাজারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় প্রতিনিধিরা বলছেন, ‘নিজেদের বাচাতে বদিউল আলমরা ঘাবটি মেরে বসে রয়েছে। সুযোগ পেলেই আবারো নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবেন। তাই দ্রুত বদিউল আলমদের মতো যারা আছেন তাদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।
অভিযুক্ত আওয়ামীলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে তিনজন নেতার কথা বলা হচ্ছে তাদের সঙ্গে আমার কোন যোগাযোগ নেই। এক সময় আওয়ামীলীগের রাজনীতি করতাম। পদ-পদবীও ছিল। কখনো অর্থ যোগান দেননি বলেও দাবি করেন তিনি।
এছাড়া তাকে অস্ত্র দিয়েছেন এমন প্রশ্ন প্রতিবেদক না করলেও তিনি নিজে থেকে বলতে শুরু করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময়ে কোন আওয়ামীলীগ নেতাকে তিনি অস্ত্র সরবরাহ করেননি। শেষে এসব কেটে দেয়ার জন্য প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন।