ডেঙ্গু প্রতিরোধে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট সেল চালুসহ নানা পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি জনগণের সহায়তা চেয়েছেন। শুক্রবার দক্ষিণ খুলশী সিটি কর্পোরেশন ভিআইপি হাউজিং সোসাইটি জামে মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করার পর স্থানীয় জনগণের সাথে মতবিনিময়কালে এ সহায়তা চান মেয়র।
মেয়র বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মেমন হাসপাতালকে ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট সেল হিসেবে ঘোষণা করেছি। সেখানে কারো ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শক্রমে বিনামূল্যে এনএস ১ অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে পারবেন। এছাড়া, আক্রান্তদের সেবা দিতে প্রস্তুত আছেন আমাদের চিকিৎসকরা। আমাদের সবাইকে মিলে চট্টগ্রামকে একটি সবুজ শহরে পরিণত করতে হবে। এর অর্থ শুধু গাছ লাগানোই নয়, বরং আমাদের আশেপাশে পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা এবং ডেঙ্গু জাতীয় রোগ প্রতিরোধ করাও।
এতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম.এ. আজিজ, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজি সিরাজ উল্লাহ, মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম, ড্যাব নেতা ডা .বেলায়ত হোসেন ঢালী, ডা. সরওয়ার আলম, মেয়রের রাজনৈতিক সচিব মারুফুল হক চৌধুরী, দক্ষিণ খুলশী সিটি কর্পোরেশন ভিআইপি হাউজিং সোসাইটির নেতৃবৃন্দ এবং বিএনপি দলীয় অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বক্তব্যে মেয়র ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশনের নেওয়া পদক্ষেপের ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেন। তিনি জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চালু করা হয়েছে এবং মশার লার্ভা ধ্বংস করতে স্প্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। এডিস মশার বিস্তার রোধে নগরবাসীর সহায়তার প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশার লার্ভা জন্মায়, যা ডেঙ্গু বিস্তারের জন্য দায়ী। এজন্য বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় ফুলের টব বা পানির টব খালি রাখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।”
পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে গাফিলতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে মেয়র বলেন, পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দৈনিক কাজের মনিটরিং করা হচ্ছে। এখন থেকে রাতে ময়লা পরিষ্কার কার্যক্রম পরিচালিত হবে যাতে দিনের বেলায় নাগরিকদের ভোগান্তি কম হয়। তার মতে, এভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে চট্টগ্রামকে একটি গ্রীন ও হেলদি সিটিতে পরিণত করা সম্ভব।
মেয়র আরও বলেন, তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চান। তিনি জনগণকে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে বলেন এবং কোনো অনিয়ম লক্ষ্য করলে তা সরাসরি মেয়রকে জানাতে বলেন।
ভবিষ্যতে চট্টগ্রামকে একটি আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করার লক্ষ্যে মেয়র প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেন, চট্টগ্রামের মধ্যে একটি বিশ্বমানের পর্যটন শহর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য পর্যটনখাতের বিকাশ আমার অন্যতম লক্ষ্য। আমাদের পরিবেশ রক্ষা করে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন করে আমরা আরও বেশি পর্যটক আকর্ষণ করতে পারব এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারব।
“চট্টগ্রাম শুধু আমার নয়, এটি ৭০ লক্ষ মানুষের শহর। এই শহরের উন্নয়নে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। পাহাড় কাটা বন্ধে সবার সচেতনতা এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলা প্রয়োজন। আমাদের পাহাড় ও সমুদ্র রক্ষা করে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আকৃষ্ট করার সুযোগ রয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।”
“শহর উন্নয়নের জন্য আমাকে দায়িত্ব দেয়ায় আমি কৃতজ্ঞ এবং নগর পিতা নয়, সেবক হয়ে কাজ করতে চাই,” এ প্রতিজ্ঞা নিয়ে তিনি উপস্থিত জনগণকে আশ্বস্ত করেন যে, শহরের যেকোনো সমস্যায় নগরবাসীর পাশে থাকবেন এবং গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে লড়াই চালিয়ে যাবেন।