৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। দেশ ও জাতির এক মহা ক্রান্তিকালে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর জাতীয়তাবাদী চেতনার ঐতিহাসিক বহিঃপ্রকাশ ঘটে । বিজাতীয় আগ্রাসী বলয় ভেঙ্গে এই দিনে পুনঃজন্ম লাভ করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব। গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান আবার ফিরে গেলেন তার সৈনিক জীবনে কিন্তু ১৯৭২ থেকে ৭৫ সময়টা যখন এদেশের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত শাসকগোষ্ঠী চরমভাবে ব্যর্থ হলেন দেশ পরিচালনার কাজে, ঠিক তখন সংকটের আবর্তে নিমজ্জিত জাতিকে নতুনভাবে নেতৃত্ব দিতে আবার সেই কণ্ঠস্বর “আমি মেজর জিয়া বলছি”
মূলত স্বাধীনতার পর যখন রুশ-ভারত চক্রে পরে এদেশের শাসকগোষ্ঠীর আধিপত্যবাদের কাছে মাথা নত করে ঠিক তখন থেকে এ জাতির দুর্ভাগ্য আবার শুরু হয়। দেশের অর্থনীতি ভেঙ্গে পরে, দেশে শুরু হয় দুর্ভিক্ষ। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের প্রায় ৫ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, খুন, হত্যা, দুর্নীতি সব মিলিয়ে দেশ চরম অরাজকতা পূর্ণ হয়। এরপর বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে মানুষের রাজনৈতিক অধিকার লুন্ঠন করে তৎকালীন শাসক। দেশের এই চরম বিশৃঙ্খল অবস্থার মাঝেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্য নিহত হন।
শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত অনুগত খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত হয় মন্ত্রিসভা কিন্তু মাত্র আড়াই মাসের মাথায় ৩ নভেম্বর সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে জেনারেল খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে বিচারপতি সায়েম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। খালেদ মোশাররফ সেনাপ্রধান জেনারেল জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দি করে নিজেই সেনাপ্রধানের পদ দখল করে। কিন্তু খালেদ মোশারফের এই অবৈধ ক্ষমতা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
৬ নভেম্বর রাতে সিপাহী-জনতার মিলিত হয়ে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করে নিয়ে আসে, আবার ভেসে আসে সেই কন্ঠস্বর “আমি মেজর জিয়া বলছি” সিপাহী-জনতার বিপ্লব দেশবাসীকে দিয়েছিল স্বস্তি। অমানিশার আধার কেটে স্বার্থান্বেষীদের কুচক্র ব্যর্থ করে জাতির নেতৃত্ব পেলেন জিয়াউর রহমান। বস্তুত ৭ই নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লব এর মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে অভিষেক জিয়াউর রহমানের।
সিপাহী জনতার ভালোবাসা ও অভিনন্দনে সিক্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের এক নির্ভীক বীর সেনানী জিয়াউর রহমান তার দৃঢ় নেতৃত্বে ও অসীম দেশপ্রেমকে পুঁজি করে সংকটে আবর্ত্বিত জাতির হাল ধরেন।
লেখক : নাজমা সাঈদ, সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, জাসাস জাতীয় নির্বাহী কমিটি