ইসরায়েলে হামলা নিয়ে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনার মধ্যেই পুরোনো দ্বন্দ্ব ভুলে পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি ইসলামাবাদ আসছেন তিনি।
সফরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইসলামাবাদ ও তেহরানের সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ। উচ্চপর্যায়ের এই সফরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, সেনাপ্রধান আসিম মুনির ও সামরিক বাহিনীর কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
চলতি বছর জানুয়ারির দিকে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিল প্রতিবেশী দুই দেশ। গত ১৬ জানুয়ারি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুই শিশু নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছিলেন পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে।
জবাবে পরের দিন ১৭ জানুয়ারি ইরানে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে পাকিস্তান। এতে দেশটির সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে নিহত হন ৭ জন।
ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পাশাপাশি ইরানে নিজেদের দূতকেও প্রত্যাহার করে নিয়েছিল ইসলামাবাদ এবং পাকিস্তানে নিযুক্ত ইরানের দূতকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। পরে অবশ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্ঠায় অল্প সময়ের মধ্যেই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়।
তবে এসব সত্ত্বেও রাইসির এবারের পাকিস্তান সফরের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে; আর সেই তাৎপর্যের মূলে রয়েছে ইসরায়েলে ইরানের সাম্প্রতিক হামলা।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিহত হন ১৩ জন। নিহতদের মধ্যে ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) দুই জ্যেষ্ঠ কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা জাহেদী এবং মোহাম্মদ হাদি হাজি রহিমিও ছিলেন।
হামলার দায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েল স্বীকার করেনি। তবে সাক্ষ্য-প্রমাণ যা পাওয়া গেছে,তাতে হামলাটি যে আইডিএফ করেছিল— তা পরিষ্কার।
গত সপ্তাহে ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছিলেন— এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
তারপর শনিবার রাত ও রোববার ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ৩ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরানের সামরিক বাহিনী। হামলায় হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। বেশিরভাগ ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে ইসরায়েলের ৯টি স্থাপনায় ইরানি ড্রোন আঘাত হানতে সফল হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে চরম দ্বন্দ্ব রয়েছে ইরানের। সেই দ্বন্দ্ব আরও ব্যাপকভাবে বেড়েছে গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে।
প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোবার গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর পাকিস্তানও ফিলিস্তিনের প্রতি প্রকাশ্যে দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেছে।
সূত্র : জিও টিভি