নির্বাচনে না এসে যে ভুল করেছে, তার জন্য বিএনপিকে পস্তাতে হবে, মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলটি কালো পতাকা মিছিলের নামে আবারো সন্ত্রাস ও সহিংসতার জানান দিচ্ছে। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধান এবং জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী মেনে আগামীকাল যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ। কারো অগণতান্ত্রিক আহ্বানে সাড়া না দিয়ে জনগণ বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করেছে। দেশে নতুন করে গণতন্ত্রের বিজয় নিশান উড়িয়েছে। এজন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
গণতন্ত্রে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক বিষয়কে রাজপথেই মোকাবিলা করবে, জানিয়ে তিনি বলেন, এক বিন্দু ছাড় দেওযা হবে না।
বিএনপির হুমকি-ধামকিতে আওয়ামী লীগের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এগুলো অসাড় ও ফাঁকা বুলির মতো চুপসে গেছে। সাংবিধানিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার শক্তি কারো নেই।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিকৃত তথ্য উপস্থাপনের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের ইতিহাস ডিঙিয়ে তারা (বিএনপি) যে বিকৃত তথ্য বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর অপপ্রচার করে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল, তাদের সে অপচেষ্টা সফল হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেশের-বিদেশে সসম্মানে উচ্চারিত একটি নাম।
ওবায়দুল কাদের বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খানের উদ্দেশে বলেন, মঈন খান সাহেবদের দল ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্যে দিয়ে, তার পর ৩ নভেম্বর, ২১ আগস্টে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাইম টার্গেট করে হামলার মধ্যে দিয়ে প্রমাণ করেছে, তারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজাকার, আল বদরের দল। গর্হিত বক্তব্য দেওয়ার জন্য মঈন খানকে ক্ষমা চাইতে হবে জাতির কাছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মঈন খান ও তার দলের লোকজন কোথায় ছিল, এ প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়া পাকিস্তানি চর হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল কি না, সেটাই আজকে প্রশ্ন। বাংলাদেশের প্রথম সরকার তথা মুজিবনগর সরকারের অধীনে নিয়মিত বেতন-ভাতা ভোগ করতেন জিয়াউর রহমান। বিএনপি প্রমাণ করেছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিশ্বস্ত ঠিকানা হচ্ছে এই দল। বিএনপি এখনো সেই লিগ্যাসি বহন করে চলছে।
নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জানান, দ্রব্যমূল্য ও বাজার নিয়ন্ত্রণ অগ্রাধিকার। এজন্য যে অ্যাকশনের দরকার, সে অ্যাকশন নিতে হবে। শুধু হুমকি-ধামকি দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। এখানে অ্যাকশন নিতে হবে, কৌশল অবলম্বন করতে হবে। কারণ, আমাদের দেশের যে বাস্তবতা, সবকিছু ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করা যায় না।
‘কিছু কিছু কৌশলেও যেতে হবে এবং সেটা উপলব্ধি করতে হবে। কথায় কথায় কাউকে ধমক দিলে সমস্যা সমাধান হবে না। আমাদের পজিটিভ অ্যাকশনে যেতে হবে। যারা এর জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে পজিটিভ অ্যাকশনে যেতে হবে।’
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দেওয়া দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটাতে পদক্ষেপ, জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেই সুফল পেয়েছে বাংলাদেশ। ভবিষ্যতেও আলোচনার টেবিলেই অমীমাংসিত বিষয়ে সমাধানে পৌঁছানো যাবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন—আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম ও সুজিত রায় নন্দীসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।