পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এমপি বলেছেন- আজকের শিশুরা অনেক দক্ষ, অনেক পারদর্শী। তাদের যদি আমরা একটু তাদের পাঁছে দাড়াই। তাহলে নিশ্চয় এদেশ তাদের হাতে নিরাপদ থাকবে। শেখ হাসিনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে যে আজকের শিশুরা আগামী দিনে তারা দেশ পরিচালনা করবে, তারাই দেশ রক্ষা হবে, তাদের হাতে নিরাপদ থাকবে। তাদের হাতে নিরাপদে দেশ রাখতে চাইলে তাদেরকে বড় করে অনন্য ভূমিকা রাখতে পারে সেই লক্ষ্য রাখতে হবে।
রবিবার (১৭মার্চ) সকালে খাগড়াছড়ি টাউনহল মিলনায়তনে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকালে টাউন হল প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা সহ সরকারি-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান- রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
তিনি আরো বলেন, আমরা সবাই মিলে কাজ করলে ২০৪১সালে স্মার্ট বাংলাদেশ, ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত, নিপীড়ন শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন দেশ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ হিসেবে আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো। বিগত ১৫বছরে দেশে অনেক সংকট সৃষ্টি হয়েছিল। বৈশিক করোনা মহামারী থেকে শুরু করে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, বাজারে মূল্যস্ফীতি। তখন অনেকেই নানান ভাবে ষড়যন্ত্রকারীরা চিন্তা করছিলো, হয়তো বাংলাদেশ আবার তলিয়ে যাবে। কিন্তু বাংলাদেশ তলিয়ে যায় নাই। এটা একমাত্রই সম্ভব হয়েছে এদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন পদে বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব প্রাপ্ত থেকে নিরসল ভাবে কাজ করেছেন। তাদের ভিতরে দেশপ্রেম আছে , তারা দেশকে ভালোবাসেন, দেশের সন্তানদের ভালোবাসেন, দেশের সন্তানদের রক্ষা করেছেন, মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য সচেষ্ট থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করেছেন বলে আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন বলে বাংলাদেশ অত্যন্ত চমৎকার একটা সুশৃঙ্খল দেশে পৌছাতে পেরেছি। এ অর্জন সকলের। এ অর্জন আমাদের যথেষ্ট নয়, আরো অর্জন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। আগামীর ভবিষ্যত প্রজন্মকে যদি শক্তিশালীভাবে সৃষ্টি করতে না পারি, শাক্তিশালী করে দাঁড়াবার জন্য তৈরি করতে না পারি, তাহলে অন্যান্য পৃথিবীর যে দেশ তলিয়ে গেছে, দিশেহারা হয়ে গেছে- সেই রকমই হয়ে যাবে। সেই জনই আমাদের এ জাতীয় শিশু দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জাতির জন্য। এদেশের সকল মানুষই বাংলাদেশের মানুষ। বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে বাংলাদেশকে ভালোবাসতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বারবার জাগ্রত করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শিশুদের বড় করা। সুষ্ঠভাবে এবং নিরাপদে তাদের জায়গায় পৌঁছে দেয়া।
আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং দিঘিনালার কুজেন্দ্র-মল্লিকা মর্ডাণ কলেজের প্রভাষক পারভীন আক্তারের সঞ্চালনায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম বার, খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শানে আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রইস উদ্দিন আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন অধ্যাপক বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয শিশু দিবসের তাৎপর্য নিয়ে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি পুলিশ লাইন্স হাই স্কুলের শিক্ষার্থী।
সভা শেষে খাগড়াছড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও জেলা শিশু একাডেমির শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
এরপরই দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রাপ্ত ৩টি ট্রাই সাইকেল ও ৬টি সাদাছড়ি বিতরণ করা হয়।