সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ড্রেজার দিয়ে সাঙ্গু নদী থেকে তোলা হয় বালু। এসব বালু ঠিকাদারদের চাহিদামতো ট্রাকে ট্রাকে দূর-দূরান্তে চলে যায়। প্রশাসনের অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই চলছে এ বালুর রমরমা ব্যবসা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করা হলেও থামানো যায়নি এসব অবৈধ বালু ব্যবসা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সাঙ্গু নদী থেকে যত্রতত্র বালু উত্তোলন পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এসব কার্যক্রম অবৈধ ঘোষণা করা হলেও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে উপজেলা প্রশাসন কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছেন। কয়েকজনকে জরিমানাও করেছেন। কিন্তু এ অভিযান ও জরিমানা কোনো কাজে আসেনি। অবৈধ বালু উত্তোলন সিন্ডিকেটের আবারও সক্রিয় হয়ে বালু উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
সাঙ্গু নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে ৩নং খানখানাবাদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দীন হায়দারের বিরুদ্ধে। ইউনিয়নের মোওয়াই পাড়া সাঙ্গু নদীর পাশে অবৈধ বালির স্তুপ। সাঙ্গু নদী ও বঙ্গোপসাগর থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলে এসব স্তূপ বানিয়েছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জসিম উদ্দীন হায়দার । ইউনিয়নে যেসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলে সব কাজের ঠিকাদারি চেয়ারম্যান নিজেই করেন। আর এসব উন্নয়ন কাজের প্রয়োজনীয় বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করেন। বাইরেও চলে বালু বিক্রির মহোৎসব।
অন্যদিকে একই ইউনিয়নের ঈশ্বর বাবুর হাট বালির স্তূপের মালিকানায় স্থানীয় যুবলীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দীনের। তিনি বালু জমায়েত করার অনুমতি নিয়েছে। তবে সে অনুমোদন পত্রে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, বৈধ কোনো বালু মহাল থেকে বালু কিনে এনে নির্ধারিত জায়গায় রাখা যাবে। অর্থাৎ বালু কিনে এনে রাখার অনুমতি রয়েছে। সেটিকে বালু তোলা অনুমতি বলে পাশে বঙ্গোপসাগর থেকে বালু তোলে কোটি কোটি টাকা বালু বাণিজ্য করছেন তিনি। তথ্যগুলো নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বেশ কয়েকজন নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, বাঁশখালীতে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমি দেখছি। যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাঁশখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল খালেক পাটোয়ারী বলেন, খানখানাবাদ এলাকার বিষয়টি আমার উর্ধ্বতন স্যার দেখছেন। তাঁর নজরে বিষয়টি আছে, যার কারণে বিষয়টি নিয়ে আমি কথা বলতে পারবো না।
খানখানাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দার বলেন, আমার ইউনিয়নে উন্নয়ন করার জন্য বালিগুলো সংগ্রহ করেছি। আমার ইউনিয়নে মোট ছয়টি বড় বড় রাস্তার উন্নয়ন কাজ চললাম। বালি ছাড়া কি ভাবে রাস্তার কাজ গুলো করবো। তবে তিনি নিজেই কোনো ধরনের অনুমতি না থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।