দিনের প্রথম ম্যাচের পর খুব বেশি দর্শক ছিলেন না চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এবং সিলেট রয়্যালসের ম্যাচের জন্য। প্রথম ম্যাচে ফেভারিট কুমিল্লার হার, চট্টগ্রামের দুর্বল স্কোয়াড— এর সঙ্গে মাঘ মাসের তীব্র শীত। খুব বেশি উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচ হবে না আঁচ করতে পেরেছিলেন অনেকেই। তবুও মিরপুরে হাজারখানেক দর্শক ছিলেন। সেটাও একজনের জন্য। তিনি মাশরাফি বিন মর্তুজা। যদিও তার দল বড় স্কোর গড়েও চট্টগ্রামের কাছে হেরেছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে।
যে শ’খানেক দর্শক মাঠে ছিলেন, তারা বিনোদন পেয়ে গেলেন শেষ পর্যন্ত। ১৭৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতে হতশ্রী চট্টগ্রাম শেষ পর্যন্ত উপহার দিয়েছে দুর্দান্ত এক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। আফগান তারকা নাজিবউল্লাহ জাদরানের সঙ্গে লোকাল বয় শাহাদাত হোসেন দীপু উপহার দিলেন মনে রাখার মতো এক ম্যাচ। ফলে নামে-ভারে কম আলোচিত চট্টগ্রাম বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে।
ইনিংসের শুরুর দিকে মনেই হয়নি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ঠিক চ্যালেঞ্জ জানাতে পেরেছে সিলেটকে। আভিশকা ফার্নান্দো আর তানজিদ তামিমের উদ্বোধনী জুটি খুব একটা বড় হয়নি। জিম্বাবুয়ের রিচার্ড এনগারার বলে ব্যক্তিগত দুই রানে হ্যারি টেক্টরকে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন জুনিয়র তামিম।
আভিশকা ফার্নান্দোও খারাপ খেলেননি। ইমরানউযজামানকে নিয়ে ভালোই ব্যাট করছিলেন। পাওয়ার-প্লের পর ভালো সংগ্রহও পেয়ে যায় তারা। কিন্তু এরপরই নাজমুল ইসলাম অপুর আঘাত। হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা বলের সুইং বুঝতে পারেননি লঙ্কান এই ব্যাটার। বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ৩৯ রানে।
মাশরাফি ২৫০ দিন পর বোলিংয়ে এসেই উইকেট পেয়েছেন প্রথম বলেই। ৫৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে চট্টগ্রাম। কিন্তু এরপরেই যেন শুরু বন্দরনগরীর প্রতিরোধ। শুরুতে কিছুটা দেখে-শুনে খেললেও পরে নাজিবউল্লাহ এবং দীপু দুজনেই হাত ঘুরিয়েছেন। তবে এতে ভাগ্যের সহায়তা বেশ ভালোভাবেই পেয়েছেন নাজিবউল্লাহ। তিনবার তার সহজ ক্যাচ ছেড়ে দিয়েছেন সিলেটের ফিল্ডাররা।
জীবন পেয়ে সেটা হাতছাড়া করেননি এই আফগান ব্যাটার। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে গিয়েছেন দীপু। এই লোকাল বয় নিজেও জীবন পেয়েছেন ২৫ রানের সময়। সেই শাস্তিই সিলেটকে দিয়েছেন দুজনে। তাদের শতরান পেরুনো পার্টনারশিপ চট্টগ্রামকে এনে দিয়েছে দারুণ এক জয়। দীপু অপরাজিত ছিলেন ৫৭ রানে। নাজিবউল্লাহর ব্যাট থেকে এসেছে ৬১ রান।
এর আগে টস হেরে মাশরাফিকে নিয়েই খেলতে নেমেছিল সিলেট। দিনের প্রথম ম্যাচটা যদিও বড় স্কোর দেখেনি। তাই মিরপুরের মাঠে বড় রানের আশাটা কিছুটা যেন মিইয়ে যেতে বসেছিল। তবে সিলেটের ব্যাটসম্যানরা সেই ভাবনায় স্বস্তি এনে দিয়েছিলেন। বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান জাকির সর্বোচ্চ ৭০ রান (৪৩ বল), মিঠুন ৪০ (২৮ বল), নাজমুল হোসেন শান্ত ৩৬ রান (৩০ বল) এবং আয়ারল্যান্ডের হ্যারি টেক্টর করেন ২৬ রান (২০ বল)। তাতেই ১৭৭ রানের বলার মত স্কোর পেয়ে যায় গতবারের রানারআপরা।
ম্যাচটিতে সিলেটের লড়াকু পুঁজির পেছনে বড় অবদান রেখেছেন জাকির। মাঝে ব্যাট-বলে না মিললেও, শেষ পর্যন্ত তিনি সেই বাধা উৎরে গেছেন। ৭টি চার ও এক ছক্কায় শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৭০ রানে। তাকে বেশ ভালো সঙ্গ দেওয়া আইরিশ ব্যাটার টেক্টরও দুটি চারের বাউন্ডারিতে ২৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।